, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ , ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


তানজিম সাকিবের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্কের ঝড়

  • আপলোড সময় : ১৭-০৯-২০২৩ ০৫:৪৯:৪৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০৯-২০২৩ ০৫:৪৯:৪৫ অপরাহ্ন
তানজিম সাকিবের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্কের ঝড়
এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে দারুণ পারফর্ম করেছেন তিনি। বল হাতে তার শিকার জোড়া উইকেট। রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ ওভারে তার ওপরেই আস্থা রেখেছেন লাল-সবুজের দলপতি সাকিব আল হাসান। তবে সেই পারফরম্যান্স রোমাঞ্চের ৪৮ ঘণ্টা না পার হতেই বিতর্কে এই পেসার।
 
মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার একটি পোস্টকে ঘিরেই এই বিতর্কের সূত্রপাত। ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেছিলেন তরুণ এই পেসার। ওই পোস্টে লেখা, স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়।
 
ওই পোস্টে তিনি আরও লেখেন, ‘আমি যা পাই তোমাকে খাওয়াব, সে তাকে রাজরানি হয়ে আছে। এখন সে রাজরানি না হয়ে কর্মচারী হতে চায়। আসলে স্ত্রী স্বামীর মর্যাদা বোঝেনি, স্ত্রী নিজের মর্যাদাও বোঝেনি। ঘর একটি জগৎ। অসংখ্য কাজ রয়েছে। আজ ছেলেদের বেকারত্বের বড় কারণ হচ্ছে- মেয়েরা এগিয়ে আসছে, ছেলেরা কোনো চাকরি পাচ্ছে না। একটি ছেলেকে চাকরি দিলে পুরো পরিবারের উপকার হয়। অতএব মা-বোনেরা নিজের আত্মমর্যাদা রক্ষার্থে স্বামীর আনুগত্য ও বাসায় অবস্থান করে রানির হালাতে অবস্থান করুন। অতএব মা-বোনেরা দুনিয়া কামাতে যেয়ে আখেরাত না হারিয়ে ঘরে অবস্থান করে স্বামী-সন্তানের খেদমত করে দুনিয়া ও আখেরাত দুটিই কামাই করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।’
 
তবে পোস্টটির শেষে একটি মাইক্রোফোনের ইমোটিকনসহ ‘শায়খ আবু বকর মুহাম্মাদ জাকারিয়া (হাফিযাহুল্লাহ)’ নাম লেখা দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হঠাৎ করেই তানজিমের এই পোস্টটির স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে চলছে তীব্র সমালোচনা। নেটিজেনরা বলছেন, নারীরা এখন এগিয়ে যাচ্ছেন, নারীদের নানান দিক দিয়ে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। সেখানে সদ্য জাতীয় দলে অভিষিক্ত একজন ক্রিকেটারের এমন মন্তব্য কোনোভাবেই কাম্য না। অনেকের দাবি, তার এমন নারীবিদ্বেষী বক্তব্য ভুল পথে পরিচালিত করতে পারে তার ফেসবুক অনুসারীদের।
 
চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অভিনেতা মাসুদ আখন্দের ভাষ্য, আমি মনে করি বিসিবিকে জবাবদিহি করতে হবে, কেন জাতীয় দলের একজন প্লেয়ার দেশের সব পেশাজীবী নারীদের নিয়ে অপমানজনক কথা বলে? তবে এটাই তরুণ এই পেসারের একমাত্র বিতর্কিত পোস্ট না। এর আগে, গত ১৯ জুলাই ইমার্জিং এশিয়া কাপ চলাকালীন নিজের ফেসবুক পেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘ফ্রি মিক্সিং’ নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

ওই পোস্টে লেখা ছিল, ‘ভার্সিটির ফ্রি মিক্সিং আড্ডায় অভ্যস্ত মেয়েকে বিয়ে করলে আর যাই হোক সন্তানের জন্য একজন লজ্জাশীলা মা দিতে পারবেন না।’ ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ১৪ মিনিটে করা ফেসবুক পোস্টটিতে প্রায় ১৫ মিনিটে তার সতীর্থসহ ৪২৩ জন রিঅ্যাক্ট করেছিলেন। পরে অবশ্যই এই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার পুরোনো পোস্ট ভাইরাল হলেও এখনও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেননি এই ক্রিকেটার।